২০১৩ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়ের পরে কিছুদিনের প্রেম, শেষে বিয়ে হয়েছিল ওই দুজনের। কিছুদিন সংসারের পর স্বামী-স্ত্রীর মনে একে অপরকে নিয়ে সন্দেহের বীজ দানা বাধে। শেষ পর্যন্ত স্বামী দায়ের করেছিলেন বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা।
অভিযোগ ছিল যে স্ত্রী ধোঁকা দিচ্ছেন, অন্য পুরুষদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখছেন। সেই মামলার নথি হিসাবে আদালতে স্ত্রীর মোবাইলের কথোপকথোন, চ্যাট প্রভৃতি পেশ করেছিলেন স্বামীর উকিল।
তখনই স্ত্রীর সন্দেহ হয় যে মোবাইলে গোপনে উঁকি দিচ্ছিলেন স্বামী। স্ত্রীও পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। সেখান থেকে বিষয়টি যায় তথ্যপ্রযুক্তি দপ্তরে। তদন্তে উঠে আসে কীভাবে বেআইনীভাবে স্ত্রীর মোবাইলে একটি সফটওয়্যার ঢুকিয়ে দিয়ে সব তথ্য হাতিয়ে নিয়েছেন স্বামী।
পশ্চিমবঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি আইন অনুযায়ী মীমাংসাকারী কর্মকর্তা তল্লীন কুমার ওই ব্যক্তিকে ৫০ হাজার রুপি জরিমানা করেছেন।
কিন্তু স্ত্রীর অভিযোগ, তাঁর আত্মীয়স্বজন, শিক্ষক – কারও সঙ্গেই যোগাযোগ রাখা পছন্দ হয় নি স্বামীর। সেকারণেই বাপের বাড়িতে চলে যান। কিন্তু দিন কয়েকের জন্য শ্বশুরবাড়িতে ফিরে গিয়েছিলেন। তখনই নিজের ফোন খারাপ হয়ে গেছে বলে কিছুক্ষণের জন্য স্ত্রীর ফোনটি নিয়েছিলেন স্বামী।
তদন্তে উঠে এসেছে যে ওই সময়েই স্ত্রীর মোবাইলে এমন একটি সফটওয়্যার লোড করে দেন স্বামী, যার মাধ্যমে কার সঙ্গে কী কথা হচ্ছে, কার সঙ্গে স্ত্রী কী চ্যাট করছেন, সব কিছুই স্বামী জানতে পারতেন।
ওই নারীর আইনজীবি বিভাস চ্যাটার্জী বলছেন, তথ্যপ্রযুক্তি আইন অনুযায়ী ওই ব্যক্তি নিশ্চিতভাবেই তার স্ত্রীর ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়েছেন। সেই সব রেকর্ডই বিবাহ বিচ্ছেদের মামলায় পেশ করা হয়েছিল। ওই নারীর স্বামী এবং তার আইনজীবিদের অবশ্য দাবি ছিল যে স্ত্রীর মোবাইলে কোনও উঁকি দেওয়া হয় নি। কিন্তু মীমাংসাকারী অফিসার তল্লীন কুমার সেই দাবি খারিজ করে দিয়ে ৫০ হাজার রুপির জরিমানা আদেশ দিয়েছেন। বিবিসি বাংলা।