মোস্তফা কামাল সুমন: সামাজিকীকরণের জন্য বিদ্যালয় ব্যবস্থার উদ্ভব। আর সামাজিকীকরণের প্রধান কাজ করে শ্রেণি শিক্ষা কার্যক্রম। কিন্তু নানা পরীক্ষার কারণে গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জে শ্রেণি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বছরের বিরাট একটা সময় পরীক্ষার কারনে শ্রেণি শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা যাচ্ছে না। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহন করে প্রকৃত সামাজিক মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারছে না। গোবিন্দগঞ্জ স্বতন্ত্র পরীক্ষা কেন্দ্র নির্মান করা আবশ্যক হয়ে উঠেছে।
গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ একটি বিশাল আয়তন বিশিষ্ট্য উপজেলা। ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এই উপজেলা। এই উপজেলার মাধ্যমিক থেকে স্নাতকোত্তর স্তর পর্যন্ত প্রায় ১৬৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। জেএসসিতে ১৫টি, এসএসসি ও সমমানের পর্যায়ে ১৩, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ৮টি এবং ডিগ্রী পর্যায়ে ৩টি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়াও প্রাথমিক সমাপনীর জন্য কেন্দ্রও রয়েছে অনেকগুলো। এমন প্রতিষ্ঠান আছে যে প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক থেকে শুরু করে ডিগ্রী পর্যায় পর্যন্ত পরীক্ষার কেন্দ্র। আর এতেই ব্যাহত হচ্ছে শ্রেণি কার্যক্রম। শিক্ষার্থীরা শ্রেণি কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষা ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অর্ধ বার্ষিকী পরীক্ষা, নির্বাচনী পরীক্ষা ও বার্ষিক চুড়ান্ত পরীক্ষা তো আছেই। কেন্দ্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো বছরে প্রায় অর্ধেক সময় নানা ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা ও সরকারি ছুটির কারনে বন্ধ থাকে। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জের একটি কেন্দ্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষক জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানে এ বছরের জানুয়ারীতে শুরু হওয়া পাঠ্যক্রমের পূর্ণমাত্রায় ক্লাস শুরু হয়েছে মার্চের একেবারে শেষ সপ্তাহে। একই রকমচিত্র উপজেলার কেন্দ্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর।
এছাড়াও নিরাপত্তার জন্য বিপুল সংখ্যক আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও পরীক্ষার তদারকির জন্য বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের অফিসারদের নিয়োগ দেওয়া হয়। এতে এতো বড় উপজেলার আইন শৃঙখলা রক্ষা হুমকির মুখে পরে। আর ব্যাহত হয় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সেবা।
গোবিন্দগঞ্জে একটি স্বতন্ত্র পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করা অত্যন্ত জরুরি। যেখানে প্রাথমিক থেকে শুরু করে স্নাতক পর্যায় পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠানের আয়োজনের ব্যবস্থা থাকবে। প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন হতে হবে সেই স্বতন্ত্র পরীক্ষা কেন্দ্র। উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে আহবায়ক এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কে সদস্য সচিব করে একটি পরীক্ষা ব্যবস্থা কমিটি গঠন করে পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করছি গোবিন্দগঞ্জে একটি স্বতন্ত্র পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপনের।