প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ গাইবান্ধা সদর উপজেলার দারিয়াপুর অঞ্চল শাখার আয়োজনে সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষকফ্রন্টের প্রতিনিধি সভা শুক্রবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয়। কৃষি, কৃষক ও ক্ষেতমজুরদের জীবন বাঁচাতে কৃষি ফসলের লাভজনক দাম নিশ্চিত করা, প্রতিটি ইউনিয়নে সরকারি ক্রয়কেন্দ্র খুলে খোদ চাষীদের কাছ থেকে সরাসরি ফসল ক্রয়, উন্নয়ন বাজেটে ৪০% কৃষিখাতে বরাদ্দ, শ্রমজীবিদের সারা বছরের কাজ ও খাদ্যের নিশ্চয়তা বিধান, গ্রাম-শহরে শ্রমজীবিদের জন্য আর্মি রেটে রেশনিং ব্যবস্থা চালু, গ্রামীণ প্রকল্প সমূহের ঘুষ, দুর্নীতি ও দলীয়করণ বন্ধ, ভূমিহীন ক্ষেতমজুরদের রেজিষ্ট্রেশন কার্ড প্রদান, ১৫০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্প চালু, ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত কৃষি ঋণ সুদাসলে মওকুফ ও সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। জেলা ফোরাম সদস্য সুকুমার চন্দ্র মোদকের সভাপতিত্বে প্রতিনিধি সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাসদ জেলা সমন্বয়ক গোলাম রব্বানী, জেলা ফোরাম সদস্য অ্যাড. মোস্তফা মনিরুজ্জামান, মহিলা জেলা ফোরাম সভাপতি ইসরাত জাহান লিপি, জেলা ফোরাম সদস্য খলিলুর রহমান, আবু বক্কর সিদ্দিক, প্রভাষক শফিকুল ইসলাম, অ্যাড. আব্দুস সালাম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, উৎপাদনের মূল চালিকাশক্তি শ্রমজীবি মানুষমাত্রই সমস্যার সম্মুখীন। চাষীরা ধান ও সবজি চাষ করে ফসলের ন্যায্যমূল্য পায় না। একদিকে কৃষককে চড়াদামে সার, বীজ, কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণ কিনতে হয়, অপরদিকে ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকে হতে হয় বঞ্চিত। ফলে কৃষক একবার কিনতে ঠকে আরেকবার বেঁচতে ঠকে। দুই ঠকাঠকির পাল্লায় পড়ে ক্রমাগত সে সর্বাশান্ত হচ্ছে। ভূমিহীন ক্ষেতমজুরদের অবস্থা আরও নাজুক। সারাবছর কাজের কোন নিশ্চয়তা না থাকায় অভাব নিত্যসঙ্গী, দারিদ্র্যের কষাখাতে তারা জর্জরিত। গ্রামে-শহরে সর্বত্র চলছে পুঁজিপতি শ্রেণীর বেপরোয়া শোষণ-লুণ্ঠন। নিম্ন মজুরি, মূল্যবৃদ্ধির বোঝা চাপিয়ে শ্রমজীবি মানুষের জীবন-জীবিকা কঠিন করে তুলেছে। চরম অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে তাদের ভবিষ্যত। শোষণমুক্ত এ ব্যবস্থা পরিবর্তন করতে হলে শ্রমজীবি মেহনতি মানুষের আন্দোলন জোরদার করতে হবে। বক্তারা অবিলম্বে হাওর অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করে দুর্নীতি অনিয়ম দলীয়করণ মুক্তভাবে আগামী ফসল না ওঠা পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত সকলকে পর্যাপ্ত ত্রাণ, কৃষি পুনর্বাসন, সরকারি-বেসরকারি সকল কৃষি ঋণ মওকুফ ও সুদমুক্ত কৃষি ঋণ প্রদানের আহবান জানান।